ফ্রিল্যান্সিং কি? না জানলেই ঠকবেন?
ফ্রিল্যান্সিং কি? বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ও সমালোচিত বিষয় হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিল্যান্সিং করে কেও তার ফিউচার গড়ছে আবার কেও ফ্রিল্যান্সিং নামটি শুনলেই রেগে যায়। আসলে আমাদের মধ্যে এই ভেদাভেদ তৈরি হয়েছে আমাদের সিদ্ধান্তের ভুলে।
এই ফ্রিল্যান্সিং জগতে ভুল সিদ্ধান্ত সঠিক ও সঠিক সিদ্ধান্ত কিভাবে ভুলে রূপান্তরিত হয় নিচে তা চুল ছেরা বিশ্লেষণ করতে চলেছি। আপনি যদি এই পোস্টটি সম্পুর্ণ পড়েন তাহলে আপনার মনেও আর কোন ভুল ধারনা থাকবে না।
পেজ সূচিপত্রঃফ্রিল্যান্সিং কি?ফ্রিল্যান্সিং করার আগে খুঁটিনাটি
- ফ্রিল্যান্সিং কি? না জানলেই ঠকবেন?
- ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি
- ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কি
- ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা কি কি
- সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ ও সেক্টর
- ফ্রিল্যান্সিং করার আগে কি কি জানতে হয়
- ফ্রিল্যান্সিং করতে কি কি দক্ষতা লাগে
- ফ্রিল্যান্সিং আসলে কাদের জন্য নয়
- বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর কোনটি
- ফ্রিল্যান্সিং জগতে আসবেন কি না?
ফ্রিল্যান্সিং কি? না জানলেই ঠকবেন?
ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং মূলত একটি পেশা যাকে মুক্ত পেশা হিসেবে ধরা হয়। সহজ ভাষায় বলতে
গেলে ফ্রিল্যান্সিং মানে হল কিছু দক্ষতা অর্জন করে অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে
ইনকাম করা। ফ্রিল্যান্সিং মূলত একটি ইন্ডাস্ট্রি/ডিজিটাল শিল্পের নাম। এই
ইন্ডাস্ট্রি/শিল্পের ভিতরে অনেকগুলো সেক্টর রয়েছে। এসব
সেক্টরের মধ্যে যেকোনো একটি বিষয় দক্ষতা অর্জন করে আপনি ঘরে বসে ইনকাম
করতে পারবেন। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং শেখার আগে আপনাকে অবশ্যই কিছু বিষয়
সম্পর্কে জানতে হবে।
আপনি যদি মনে করেন ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে লাখ টাকা ইনকাম করবেন তাহলে আপনার
মনে করাটা ভুল না। কিন্তু যদি মনে করেন আজকে ফ্রিল্যান্সিং এর জগতে এসে কাল
থেকেই লাখ টাকা ইনকাম করবেন এ ধারণাটি সম্পন্ন ভুল এবং পরিত্যাগ করতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের যেকোনো বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে আপনাকে দীর্ঘ সময়
প্রশিক্ষণ নিতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হলে অনেক বিষয়ে অভিজ্ঞ হতে হবে অনেক
সময় দিতে হয় এর পিছনে।
মূল কথা একটি সেক্টরে দক্ষতা অর্জন করতে আপনার যতদিন সময় লাগবে তা পুরোপুরি
দিতে হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করে যেতে হবে তাহলে একদিন অবশ্যই সফলতা পেয়ে
যাবেন। তবে ফ্রিল্যান্সিং শেখার আগে আপনাকে কম্পিউটার বিষয়ে একটু হলেও অভিজ্ঞ
হতে হবে আবার একটি ভালো প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে হবে যেখান থেকে আপনি দক্ষতা
অর্জনের প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন।
বাংলাদেশে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা বলে থাকে আজকে থেকে শুরু করেন কালকে
থেকে ইনকাম করুন তারা আসলে ফেক। তাদের প্ররোচনায় পা দেবেন না আপনার জন্য সঠিক
মাধ্যম আপনি নিজেই খুঁজে বের করুন। এই পোস্টটিতে ফ্রিল্যান্সিং জগতের শুরু থেকে
শেষ পর্যন্ত যাবতীয় বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি এই পোস্টটি সম্পুর্ণ
পড়েন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং জগত নিয়ে আপনার আর কোন ভুল ধারণা থাকবে না আশা করি।
ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি
বর্তমান সময়ের সবচাইতে আলোচিত ও সমালোচিত বিষয় হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং।ফ্রিল্যান্সিং কি? না জানলেই ঠকবেন? এটির
ভালো ও খারাপ উভয় দিক রয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং মূলত তাদের কাছে ভালো, যারা
ফ্রিল্যান্সিং জগতে এসে সফল হয়েছেন। এবং ফ্রিল্যান্সিং তাদের কাছে খারাপ যারা
ফ্রিল্যান্সিং জগতে এসে সফল হতে পারে নাই। ফ্রিল্যান্সিং জগতের সফল না হওয়ার
পিছনে কিছুটা নিজের ঘাটতি থাকে। যা আমরা কখনো মানতে চাইনা। ফ্রিল্যান্সিং জগৎটা
আসলে সবার জন্য নয়।
আবার ফ্রিল্যান্সিং জগতে আসার আগে আপনাকে অনেক কিছু বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করার
পর আসতে হবে। আপনি যদি মনে করেন যে আজকে থেকে শুরু করলেন কালকে থেকে ইনকাম
করবেন তাহলে এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল এবং পরিত্যাগ করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং
জগতের ভবিষ্যৎ অনেক উজ্জ্বল। আপনার ভবিষ্যত ফ্রিল্যান্সিং জগতের সাথে জড়িয়ে
উজ্জ্বল করতে চাইলে আপনাকে অনেক পরিশ্রমী হতে হবে।
আসলে আপনি ঘরে বসে টাকা ইনকাম করবেন বিষয়টা একবার ভেবে দেখুন। আবার এটিও ভেবে
দেখুন আপনি ঘরে বসে কাজ করলে আপনাকে কেউ কি কখনো টাকা দিবে আর দিবে তো কিসের
জন্য দিবে? এরকম প্রশ্ন আপনার মনে আসতে পারে। আসলে আপনি ঘরে বসে যে টাকাটা
ইনকাম করবেন সে টাকাটা আপনাকে দেওয়া হবে আপনার একটি নির্দিষ্ট দক্ষতার উপর।
আপনি যদি দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং জগতে আপনার ভবিষ্যৎ অনেক
উজ্জ্বল হবে।
কিন্তু, আপনি যদি দক্ষতা অর্জনের ব্যর্থ হন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং জগতের
ভবিষ্যৎ আপনার জন্য উজ্জ্বল কখনোই হবে না। ফ্রিল্যান্সিং জগতে যারা নিজের সফলতা
প্রমাণ করেছেন তারা অনেক পরিশ্রমী ব্যক্তি এবং এই জগতে তাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল
করেছেন। তাই বলা যায় আপনি যদি একজন অদম্য, দক্ষ ও পরিশ্রমের মানুষ হয়ে থাকেন
তাহলে ফ্রিল্যান্সিং জগৎ আপনার জন্য উজ্জ্বল ময় ভবিষ্যৎ বয়ে নিয়ে আনতে
পারে।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কি
ফ্রিল্যান্সিং বলতে বোঝায় নিজের দক্ষতা ব্যবহার করে ঘরে বসে অনলাইনে বিভিন্ন
কাজ করা যা সাধারণত বিদেশি বা দেশী ক্লায়েন্টের হয়ে থাকে। ফ্রিল্যান্সিং আপনি
দেশের বিভিন্ন এজেন্সি সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করতে পারেন আবার বাইরের দেশে অনেক
সংস্থা আছে যারা অনলাইনের মাধ্যমে কাজ করে নিয়ে পেমেন্ট প্রদান করে থাকে
এভাবেও করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং একটি সেক্টর এর ভেতরে অনেকগুলো কাজ
রয়েছে।
ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের মধ্যে রয়েছে ওয়েব ডিজাইন ও ওয়েব ডেভেলপমেন্ট,
গ্রাফিক্স ডিজাইন ,কনটেন্ট রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং ,ডাটা এন্টি ও ভার্চুয়াল
অ্যাসিস্ট্যান্ট, ভিডিও এডিটিং ও অ্যানিমেশন ,ভয়েস ওভার ট্রানজেকশন ,অ্যাপস
ডেভেলপমেন্ট ,Ux/Ui ডিজাইন ,কাস্টমার সাপোর্ট ,গেম ডেভেলপমেন্ট ,ল্যাঙ্গুয়েজ
ট্রান্সফার ইত্যাদি। এসব যেকোন একটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে আপনি আজীবন ঘরে বসে
টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আপনাকে পছন্দের সেক্টর সিলেকশন করতে হবে আপনাকেই যা জন্য বেস্ট আপনি। এ
সেক্টরগুলো নির্ভর করে বিভিন্ন সিস্টেমের উপর ও বিভিন্ন ক্যাটাগরির উপর। আপনার
কোন বিষয় ভাল লাগে এবং আপনি কোন বিষয়ে একটু হলেও অভিজ্ঞ এরকম বিষয় সিলেক্ট
করুন। সে বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করুন এবং ঘরে বসে ইনকাম করুন।
ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা কি কি
ফ্রিল্যান্সিং মূলত মুক্ত পেশা। যারা মুক্ত পেশাতে আগ্রহী এবং মুক্ত পেশা
ভালোবাসেন তাদের জন্য মূলত ফিনান্সিং।ফ্রিল্যান্সিং মূলত আপনার কোন
দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ঘরে বসে ইনকাম করা। ফ্রিল্যান্সিংয়ের অনেকগুলো সুবিধা
রয়েছে।আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সার হয়ে থাকেন বা যেকোনো একটি বিষয়ে দক্ষতা
অর্জন করে থাকেন তাহলে ঘরে বসে নিজের সময় মত কাজ করতে পারবেন এখানে অফিস টাইম
এর কোন বাধ্যবাধকতা নেই।
আপনি চাইলে রাতেও করতে পারেন দিনেও করতে পারেন বিকালেও করতে পারেন সকালেও করতে
পারেন।ফ্রিল্যান্সিং করলে আপনাকে কোন অফিসে যেতে হবে না বা কোন অফিসের রুলস বা
প্যারা নেই। ঘরে বসে ইন্টারনেট ও কম্পিউটার ব্যবহার করে কাজ করতে পারবেন এবং
বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে কাজ করতে পারবেন। এর আরেকটি বড় সুবিধা হচ্ছে যে এর
আয়ের কোন সীমা নেই।
আপনি যতটা দক্ষ হতে পারবেন এবং দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন সেই দক্ষতা কাজে
লাগিয়ে যে পরিমাণ কাজ করতে পারবেন সেই পরিমাণ কাজ থেকে আপনার ইনকাম আসবে। এই
ইনকামের কোন সীমাবদ্ধতা নেই। আপনার দক্ষতা যত বেশি আপনার ইনকাম সোর্স ও তত
বেশি। আপনি ফ্রিল্যান্সিং জগতের যে কোন একটি সেক্টরে দক্ষতা অর্জন করলে তা
দিয়ে শুরু করতে পারবেন এবং ইনকাম করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং করলে আপনার চাকরির ওপর নির্ভর করতে হয় না আপনি ঘরে বসে ইনকাম
করতে পারেন।এখানে কোন কাজের চাপ থাকে না এবং পরিবেশ থাকে আপনার নিয়ন্ত্রণে
আপনি আপনার স্বাধীনতা মত কাজ করতে পারবেন। আবার ফ্রিল্যান্সিং জগতের এই দক্ষতা
আপনি কাজে লাগিয়ে ব্যবসা হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। একটি প্রতিষ্ঠান দিতে পারেন
এবং অনেক মানুষের কর্মস্থান তৈরি করতে পারেন।
সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ ও সেক্টর
ফ্রিল্যান্সিং মূলত একটি ইন্ডাস্ট্রি/ডিজিটাল শিল্পের নাম এ সেক্টরের ভেতরে অনেকগুলো কাজের শ্রেণীবিভাগ রয়েছে। বর্তমানে
অনলাইনে সবচেয়ে জনপ্রিয় চাহিদা সম্পন্ন ফ্রিল্যান্সিং কাজের সেক্টর এমনভাবে
গড়ে উঠেছে যা বিশ্বব্যাপী কোম্পানি ও ব্যক্তিগত ক্লায়েন্ট এর প্রয়োজন পূরণ
করে এবং ঘরে বসে আয় করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। নিচে কয়েকটি জনপ্রিয়
সেক্টর নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ
গ্রাফিক্স ডিজাইন সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ও চাহিদা সম্পন্ন একটি সেক্টর।আপনি যদি
অঙ্কন বা চিত্র বিষয়ে পারদর্শী হয়ে থাকেন তাহলে গ্রাফিক্স ডিজাইন সেক্টর
আপনার জন্য। গ্রাফিক্স ডিজাইনে মূলত লোগো ডিজাইন- সোশ্যাল মিডিয়া- ব্যানার
ডিজাইন- পোস্টার ডিজাইন- বিজনেস কার্ড ডিজাইন- টি শার্ট ডিজাইন এগুলো নিয়ে
কাজ করা হয়।
ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টঃ
ফ্রিল্যান্সিং জগতের সবচাইতে ডিমান্ডেবল স্কিল এবং ফ্রিল্যান্সিং
মার্কেটপ্লেসের সবচেয়ে হাই পেইড কাজ ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট। এ সেক্টরে
মূলত প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করে কোডিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন ওয়েবসাইট তৈরি ও
ডিজাইন করা হয়। একজন ওয়েবসাইট ডিজাইনার ও ডেভলপারের চাহিদা মার্কেটে অনেক
বেশি। ইনকাম সোর্স এর জায়গা ও অনেক বেশি।
কন্টেন্ট রাইটিংঃ
কনটেন্ট রাইটিং মূলত একটি লেখালেখির সেক্টর। এখানে আপনি বিভিন্ন বিষয়ে
লেখালেখি করতে পারবেন। যেমন ব্লগ রাইটিং- আর্টিকেল রাইটিং- ওয়েবসাইট কন্টেন্ট
রাইটিং- প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন রাইটিং ইত্যাদি। বর্তমানে একজন ভালো মানের
কন্টেন্ট রাইটারের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
ডিজিটাল মার্কেটিংঃ
ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা বিক্রি করাকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলা
হয়। ডিজিটাল মার্কেটিং মূলত দুই ভাবে করা যায়। নাম্বারঃ১ আপনি চাইলে
আপনার একটি নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়ে তার মার্কেটিং করতে পারেন
অনলাইনে। নাম্বারঃ২ হলো আপনি অন্যের ব্যবসার মার্কেটিং করে সেবা ও পন্য
বিক্রি করে তার থেকে কমিশন নিয়ে ইনকাম করতে পারেন।
ভিডিও এডিটিং ও অ্যানিমেশনঃ
বর্তমানে বিশ্বে ভিডিও দেখে না এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। প্রত্যেকদিন
আমরা ফেসবুক ইউটিউব twitter ইত্যাদি স্যোসাল মিডিয়া মাধ্যমগুলোতে অনেক ধরনের
ভিডিও দেখে থাকি। এই ভিডিও গুলো আপলোড এর আগে এডিটিং করার প্রয়োজন হয় যা একজন
প্রফেশনাল ভিডিও এডিটর দ্বারা করানো হয়। আপনি একজন এডিটর হলে ভিডিও এডিটিং করে
অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন পাশাপাশি এনিমেশন ভিডিও বানিয়ে নিজের youtube
চ্যানেল বা ফেসবুক চ্যানেল খুলে ইনকাম করতে পারবেন।
এই কয়েকটি সেক্টরের মধ্যে যেকোনো একটি সেক্টরে আপনি দক্ষতা অর্জন করলে খুব
সহজে ঘরে বসে ইনকাম করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং করার আগে কি কি জানতে হয়
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে আপনাকে অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে
এবং জানতে হবে। প্রথমতই আপনাকে নির্বাচন করতে হবে আপনার জন্য কোন সেক্টরটি
সঠিক। ফ্রিল্যান্সিং এর অনেকগুলো সেক্টর রয়েছে আপনার পছন্দ মতো এবং আপনি যেটি
করতে পছন্দ করেন এরকম সেক্টর সিলেক্ট করুন। এরপরে আপনাকে জানতে হবে
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এবং অফলাইনে লোকাল মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে এবং
কিভাবে কাজ করা যায়।
যে সেক্টরটি সিলেক্ট করবেন সেই সেক্টর বিষয়ে ব্যাসিক কিছু ধারনা নেওয়া।
অবশ্যই আপনার একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকতে হবে। কম্পিউটার ও ল্যাপটপ অফিস
এপ্লিকেশন সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে এবং চালানোর দক্ষতা থাকতে হবে। আপনি যেই
সেক্টরটি সিলেক্ট করেছেন সেই সেক্টরের সবচেয়ে ভালো ট্রেনিং সেন্টার কোনটা সেটি
খুজে বের করতে হবে। এবং ধৈর্য সহকারে কাজ শিখতে হবে নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে
ফোকাস দিতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং করতে কি কি দক্ষতা লাগে
ফ্রিল্যান্সিং আসলে একটি মুক্ত পেশা। ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমে আপনি ঘরে বসে
অনলাইনের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ ও কম্পিউটার ব্যবহার করে ইনকাম করতে পারে।
অনলাইনের মাধ্যমে ইনকাম করতে হলে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের প্রতি দক্ষতা
অর্জন করতে হয়। এ বিষয়গুলোর প্রতি দক্ষতা অর্জনের জন্য আপনাকে যেকোনো একটি
ভালো আই্টি ট্রেনিং সেন্টার থেকে ট্রেনিং গ্রহণ করতে হবে।
তবে একটি বিষয় সবসময় মাথায় রাখবেন ট্রেনিং গ্রহণের আগে আপনাকে বেসিক কিছু
জিনিস সম্পর্কে ধারণা নিয়ে রাখতে হবে। যেমন আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকতে
হবে। কম্পিউটার ও ল্যাপটপের বেসিক এপ্লিকেশন সম্পর্কে ধারণা এবং চালানোর দক্ষতা
থাকতে হবে। ভালো মানের আইটি প্রতিষ্ঠান বের করে সেই জায়গায় ট্রেনিং গ্রহণ
করতে হবে। অনেক আইটি সেন্টার আছে যারা প্রথমে প্রতিশ্রুতি দেয় যে আপনাকে
কম্পিউটার বা ল্যাপটপ সম্পর্কে কোন কিছুই জানতে হবে না তারা হাতে কলমে আপনাকে
সব কিছু শেখাবে।
আসলে এই কথাটি সম্পূর্ণ ভুল ও বানোয়াট। ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করার আগে অবশ্যই
আপনাকে কম্পিউটার বিষয়ে দক্ষতা থাকতে হবে এবং বেসিক কিছু বিষয় সম্পর্কে ধারণা
রাখতে হবে।ফ্রিল্যান্সিং কোর্সে ভর্তি হওয়ার আগে আপনি অবশ্যই কম্পিউটারের অফিস
এপ্লিকেশন সম্পর্কে ধারণা নিয়ে রাখবেন। ফ্রিল্যান্সিং শুরুর আগে আপনাকে
বিশেষ কোনো দক্ষতা বা যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না। কম্পিউটার বিষয়ে বেসিক নলেজ
থাকলে এবং ভালো মানের আইটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলেই আপনি
ফ্রিল্যান্সিং জগতে সঠিকভাবে জীবন পরিচালনার গাইডলাইন পেয়ে যাবে।
ফ্রিল্যান্সিং আসলে কাদের জন্য নয়
বর্তমান সময়ের সবচাইতে ট্রেন্ডিং যে প্রশ্ন সেটি হল ফ্রিল্যান্সিং আসলে কাদের
জন্য? হ্যাঁ আসলেই প্রশ্নটার যুক্তি আছে? কারণ ফ্রিল্যান্সিং একটি মুক্ত পেশা
এখানে দক্ষতা অর্জন করাটা খুব জরুরী। দক্ষতা অর্জন করতে না পারলে আপনি কোন কাজও
করতে পারবেন না আবার একটি টাকা ইনকাম করতে পারবেন না। ফ্রিল্যান্সিং আপনার জন্য
হতে পারে যদি আপনি হন পরিশ্রমি অদম্য ও প্রানো চঞ্চল। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে
দক্ষতা অর্জনের জন্য অনেক সময় ও পরিশ্রম করতে হয়।
প্রথমত আপনি নির্দিষ্ট একটি সেক্টর সিলেক্ট করুন। সেই বিষয়ে রিসার্চ করুন গুগল
ও বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে ব্যবহার করে। সে বিষয়টি সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন। সেই
সেক্টর সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করতে কতদিন সময় লাগতে পারে বা কিভাবে সময় দিতে
হবে বা কিভাবে শিখতে হবে? এগুলো বিষয়ে রিসার্চ করুন। দেখুন আপনি সেই সময়টুকু
দিতে পারবেন কিনা? যদি না পারেন তাহলে সেই সেক্টরটি আপনার জন্য না।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শেখার জন্য অনেকটা পরিশ্রম করতে হয় ও সময় দিতে
হয়। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কোন বয়স ম্যাটার করে না কোন যোগ্যতা
ম্যাটার করে না সর্ব প্রথমে যেটা আপনার প্রয়োজন সেটি হচ্ছে আপনার ধৈর্য ও
পরিশ্রম। কেউ যদি আপনাকে বলে দিনে শুধু দুই-এক ঘন্টা দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখে
মাসে লাখ টাকা আয় ্করতে পারবেন তাহলে সে আপনাকে সম্পূর্ণ ভুল ও বানোয়াট
মিথ্যে কথা বলেছে।
ফ্রিল্যান্সিং এর সেক্টর গুলোর প্রতি দক্ষতা অর্জন করতে কখনো দুই ঘন্টা যথেষ্ট
নয়। ওপরে যেগুলো স্কিল বর্ণনা করা হয়েছে এগুলো প্রতিটির প্রতি দক্ষতা
অর্জনের জন্য দিনে আপনাকে আট থেকে দশ ঘণ্টা সময় দিতে হবে। অনেকদিন সময় দিতে
হবে এবং পরিশ্রম করতে হবে। আপনি যদি শুরুতেই ইনকামের আশা করেন তাহলে আপনার
শেখাটা বৃথা যাবে। প্রথমে আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে দক্ষতা অর্জন না করা
পর্যন্ত ইনকামের চেষ্টা করা যাবে না। আপনি যখন দক্ষ হয়ে যাবে তখন এমনিতেই
আপনার ইনকাম শুরু হয়ে যাবে। আপনি যদি মনে করেন দিনে সাত থেকে আট ঘন্টা বা ১০
ঘণ্টা সময় দিয়ে শিখতে পারবেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং আপনার জন্য।
আবার যদি মনে করেন যে না দিনে দুই ঘন্টা সময় দিয়ে শিখবেন হ্যাঁ তাহলে শিখতে
পারবেন কিন্তু এই শিখতে আপনার অনেক সময় লেগে যাবে। দিনে ৮ ঘণ্টা সময় দিয়ে
শিখতে যদি আপনার ৬ মাস লাগে তাহলে দুই ঘন্টা সময় দিয়ে শিখতে কমসেকম দুই বছর
লাগবে। এখন আপনি চিন্তা করেন যে আপনি আসলে কি করবেন সময় দিয়ে শিখবেন না শিখতে
সময় নেবেন। আশা করি ফ্রিল্যান্সিং কাদের জন্য এই বিষয়টি নিয়ে আপনাদের আর কোন
প্রশ্ন থাকার কথা না।
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর কোনটি
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং কথাটির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। ফ্রিল্যান্সিং এতটাই
জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছে যে একটা ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষ পর্যন্ত
পৌঁছে গিয়েছে এর বার্তা। ফ্রিল্যান্সিং এ মানুষের এত বেশি আগ্রহ প্রকাশ
করার কারণ হচ্ছে এটি একটি মুক্ত পেশা। তবে ফ্রিল্যান্সিং আসলে একটি ইন্ডাস্ট্রি
এর ভিতরে অনেকগুলো সেক্টর রয়েছে। নিচে কিছু ডিমান্ডেবল সেক্টরের লিস্ট দেওয়া
হলঃ
১.Ai/ Automation tools integration
2.web development and design
3.digital marketing
4.video editing
5.SEO and contant writing
6.Ui/Ux design
7.graphics designer
8.affiliate marketer
উপরের যেকোনো একটি বিষয় সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করে আপনি আজীবন ঘরে বসে ইনকাম
করতে পারবেন। ইনকামের আগে আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে আপনি যদি দক্ষ হতে
পারেন তারপরে ইনকাম এমনিতেই অটোমেটিক হতে থাকবে। তাই দক্ষ হওয়াটা খুবই
জরুরী।
ফ্রিল্যান্সিং জগতে আসবেন কি না?
উপরের আর্টিকেলটি যদি আপনি সম্পূর্ণরূপে পড়ে থাকেন তাহলে এখন আপনার মনে প্রশ্ন
আসতেই পারে আসলে আপনি ফ্রিল্যান্সিং জগতে আসবেন কিনা? এটি একটি
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন? এর উত্তরটি আমি আপনাকে কয়েক ধাপে বর্ণনা করে দিয়ে
দিচ্ছি। নিচে বর্ণনা করা হলোঃ
১.ফ্রিল্যান্সিং কাদের জন্য উপযুক্ত?
আপনি যদি ঘরে বসে আয় করতে চান, চাকরি করতে না চান কিন্তু আয় করতে চান, নতুন
কিছু শেখার আগ্রহ আছে, আপনার যথেষ্ট পরিমাণে ধৈর্য আছে, সারাদিনে হাতে
তুলনামূলক সময় থাকে, ৮-১০ ঘন্টা সময় দিতে পারবেন, নিজের দক্ষতা বাড়াতে চান
তাহলে ফ্রিল্যান্সিং আপনার জন্য।
২.কারা ফ্রিল্যান্সিং এলে ঠকবেন?
আপনি যদি মনে করেন দিনে দুই থেকে এক ঘণ্টা সময় দিয়ে এক থেকে দুই মাসের মধ্যে
লাখ টাকা ইনকাম করবেন, আপনার স্কিল শিখতে যদি ধৈর্য না থাকে, দিনে ৮ থেকে ১০
ঘন্টার সময় দিতে রাজি না থাকেন, দক্ষতা অর্জনের আগে ইনকামের চিন্তা করেন,
নিজের ব্যর্থতার দায় অন্যকে দেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর আপনার জন্য
নয়।
লেখকের মন্তব্যঃফ্রিল্যান্সিং কি? না জানলেই ঠকবেন?
ফ্রিল্যান্সিং কি? না জানলেই ঠকবেন?আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি যদি সঠিকভাবে মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে
ফ্রিল্যান্সিং জগত নেই আপনার কোন ভুল ধারণা থাকবে না। ফ্রিল্যান্সিং আপনার জন্য
কি আপনার জন্য? ফ্রিল্যান্সিং করলে আপনি কি ঠকবেন নাকি আপনার ক্যারিয়ার মজবুত
হবে? সবকিছুর বর্ণনা করা হয়েছে এখানে। আমি আশা করছি আমার এই পোস্টে আপনি
সম্পূর্ণ যদি পড়েন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং জগতের ভুল ধারণা গুলো সব কেটে যাবে।
পোস্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়ে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার
করবেন।ধন্যবাদ।
Ronginpata.com সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।
comment url